Pages

Monday, December 1, 2014

অপেক্ষমান প্রেম

অপেক্ষমান প্রেম

একটা মেয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ আমাকে ফলো করছিল । একদিন সাহস করে বললাম , আপনি কি কিছু বলবেন ? মুচকি হেসে বলে, “কই নাতো” । আমি আর কিছু না বলে চলে আসলাম । আবার সেই একই কাহিনি, তবে এবার আর কিছু বলা হয়নি । অনেক দিন পর আমার জিপি নাম্বারে এসএমএস পেলাম, লেখা “হা কিছু বলবো” শুধু এটুকুই লেখা । এসএমএস দেখে আমার আর চিনতে বাকি রইলনা । রিপ্লে দিলাম ‘বলুন আমি শুনবো’ । আমার ফেসবুক আইডি চাইলে আমি বলে দেই, এখন না পরে দেব । আমাকে প্রতিদিন এসএমএস করে, এভাবে চলতে থাকে প্রায় ১৫ দিন ।


এতদিনের এসএমএস আলাপে যা বুঝলাম, সে আমাকে বলতে চায় আমি তাকে লাইক করি কি না । আমি আবার এক কথার মানুষ, বলে দেই আমি লাভ তাভ কিছু বুঝিনা আপনি অন্য কথাও চেষ্টা করেন । এটা বলে মনে হল ভুল ই করলাম, সে বলল আমাকে নাকি সেখাবে লাভ । আমি শিকতে চাই কি না সে জানতে চাইল । আমি আবার জ্ঞেন পিপাসু, কেউ কিছু সেখাতে চাইলে প্রবল আগ্রহে তা শেখার চেষ্টা করি । তাই বলে দিলাম ওকে সেখাবেন তাহলে । আসলে সে আমার সাথে মজা করল আমিও মজা করলাম, এর বেশি কিছুনা । আমরা ভাল বন্ধু হয়ে গেলাম । শুধুই বন্ধু ।

- একদিন কল করল এবং কোথায় দেখা করব জানতে চাইল । এমন ভাবে আকুতি মিনতি করল, সম্মতি না জানিয়ে পারলাম না । অবশেষে দিন ক্ষণ ঠিক করে নর্থ টাওয়ার এর রেস্টুরেন্ট এ দেখা হল । মেয়েটার সাথে দেখা হতেই আমার কিছুটা মনে হল “সারোয়ার তোর এত সাহস হল কিভাবে?” এই ভাবে একা কোন মেয়ের সাথে এই প্রথম দেখা করা । মেয়েটাকে এবং এত সুন্দর সাজ-গুজ দেখে আমার ভেতরটা সাড়া দিল । যাইহোক বন্ধু হিসেবে যে ভাবনাটা ভাবা দরকার সেটার বাইরে আর গেলাম না ।
সামনা সামনি চেয়ারে বসা দুজন । লাজ সরমের মাথাটা আজ বুঝি কেটেই ফেলেছি আমি । আবার সেই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আমার দিকে । হঠাৎ মেয়েটার দুচোখে পানি টলমত, বললাম চোখে পানি কেন ? প্রায় ২ ঘণ্টা তার কথা গুলো শুনে গেলাম । আমার চোখ দুটা কাঁদ কাঁদ হয়ে গেল তার কথা গুলা শুনে ।
- মেয়েটার একটা ছেলের সাথে ৫ বছরের প্রেম ছিল । যখন তাদের প্রেম ১ বছর চলছিল, তখন মেয়েটার বিয়ের জন্য বাড়ী থেকে চাপ দেওয়া হয় । ছেলেটি তখন মেয়েকে বলেছিল ‘তুমি যদি বিয়ে কর তাহলে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আমার কোন মানে হয়না, তোমার বিয়ের দিন ই হবে আমার মৃত্যুর দিন’ । মেয়েটা বলল, তাহলে তুমি আমাকে বিয়ে কর । ছেলেটা জানায় পরাশুনা শেষ হলেই তারা বিয়ে করবে । মেয়েটা অনেক অনুরধ করে তার বাবা-মা কে বোঝায়, সে পড়াশুনা শেষ করে বিয়ে করবে । তার বাবা মা মেয়েটার পড়া লেখার আগ্রহ দেখে মেয়ের বিয়ের চিন্তা মাথা থেকে ঝেরে ফেলেন ।

- তখন তাদের প্রেম ৫ বছর চলছে । মেয়েটার ১ বছর হলেই বিবিএ শেষ, ছেলেটা ১ বছর হল চাকরী করছে ভাল একটা প্রতিষ্ঠানে । মেয়েটা ছেলেকে বিয়ের কথা বলল । ছেলেটা বিয়ের বিষয় এড়িয়ে চলে এবং আরও সময় চায় । মেয়েটা একদিন তার বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে গেল ‘যমুনা ফিউচার পার্ক’ । দেখা হল তার বয় ফ্রেন্ড এর সাথে, মেয়েটার সারা শরীরের রক্ত শীতল হয়ে গেল, বাক রুদ্ধ হল । তার বয় ফ্রেন্ড এর হাত ধরে আছে অন্য এক রমণী । সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটা বাসায় চলে আসলো । খাওয়া দাওয়া সব কিছু বন্ধ । চোখে শুধু দুক্ষে ভরা জলের স্রত । পরে মেয়েটা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, ছেলেটা ৬ মাস হল বিয়ে করেছে সেই মেয়েটিকে ।

-মেয়েটার নির্মম পরিনতি শুনে আজও আমার গা ভারি হয়ে আছে । মানুষ কত নিষ্ঠুর হতে পারে, এটা আমাদের অনেকেরই অজানা ।
একটা প্রশ্ন থেকে যায় । মেয়েটা এত মানুষ রেখে আমাকে কেন তার দুক্ষের কথা শোনালো ? উত্তর আছে, আমাকে দেখতে নাকি কিছুটা তার ভাই এর মত । মেয়েটার বিয়ের দাওয়াত দিল । যদিও যেতে পারিনি একটা বিশেষ কাজে আটকে যাওয়ার কারনে । তবে তার গিফট ঠিকই দিয়েছি দেখা করে । মেয়েটা অনেক শুখে আছে তবুও অন্তরের প্রেমাঘাত কি কখন ভোলা যায় ?

(আমার লেখার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই, এটা আমার সম্পূর্ণ কাল্পনিক দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা)

====== © Sarwar Hossain

No comments:

Post a Comment